নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ভার্চুয়ালি শপথ পড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে এ শপথ বাক্য পাঠ করান তিনি।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার সকালে তার শপথ হয়েছে। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
মেয়রের শপথ নেয়া শেষে নবনির্বাচিত কাউন্সিলদেরও শপথ শুরু হয়। তাদের শপথবাক্য পড়াচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী তৃতীয়বারের মতো নাসিকের মেয়র নির্বাচিত হন।
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে আইভী মেয়র পদে ২০১১ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে নারী মেয়র হওয়ার ইতিহাস গড়েন। এবার রেকর্ড গড়েন কোনো সিটির তৃতীয়বার মেয়র হিসেবে জয়ী হয়ে।
ডা. আইভীর জন্ম ১৯৬৬ সালের ৫ জুন। তার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আইভীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় শিক্ষাজীবনেই। ১৯৮৪ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি ওয়ার্ড কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। এরপরের বছরই মারা যান তার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা।
আইভী রাশিয়ার ওডেসা পিরাগোব মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৯২ সালে। এরপর দেশে ফিরে নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদিকার দায়িত্ব পান ১৯৯৩ সালে। এর ১০ বছর পর (২০০৩ সালে) হন নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সে বছরই তিনি নির্বাচিত হন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে।
এরপর দুই মেয়াদে টানা আট বছর ছিলেন সে পদে। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জকে সিটি করপোরেশন করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রথম নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগ অবশ্য তাকে মনোনয়ন দেয় না। তবে এতে তিনি নির্বাচন থেকে সরে না গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করেন স্বতন্ত্র হিসেবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই তিনি জয়ী হয়ে আসেন।
এরপর সিটির দ্বিতীয় নির্বাচনে (২০১৬ সালে) দলের মনোনয়ন নিয়ে ফের মেয়র পদে প্রত্যাবর্তন করেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন নিয়েই গড়লেন ইতিহাস।
মেয়র পদে দায়িত্ব পালন ছাড়াও আইভী ‘আলী আহাম্মদ চুনকা ফাউন্ডেশন’ এবং ‘নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশন’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ডা. আইভী তার শিক্ষাজীবন শেষ করে ১৯৯৩-৯৪ সালে মিটফোর্ড হাসপাতালে এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন।
২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, কদম রসুল পৌরসভা ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠনের গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এটি ছিল তৃতীয় নির্বাচন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর। এতে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে এক লাখেরও বেশি ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।